শাহ রফিকুল ইসলাম,গাইবান্ধা প্রতিনিধি:
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে বিয়ে করতে এসে শহিদুল ইসলাম নামে এক ভূয়া পুলিশ সদস্য ও নারীসহ দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার সকালে পৌর শহরের মায়ামনি মোড় থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।
থানা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রাখালবুরুজ ইউনিয়নের হরিনাথপুর বিষপুকুর গ্রামের মৃত মমতাজ মন্ডলের ছেলে শহিদুল ইসলাম ভূয়া নাম ঠিকানা ব্যবহার করে পুলিশ বিভাগে চাকরী না করেও নিজেকে পুলিশ পরিচয়ে পার্শ্ববর্তী মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের বামনহাজরা গ্রামের আব্দুল ওয়াহেদের মেয়ে শাপলা খাতুনকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। এ সময় সে তার প্রথম স্ত্রীকে ভাবী সাজিয়ে বিয়ের আলোচনায় বসায়। আলোচনার এক পর্যায়ে শহিদুল জানায়, তার পিতা বিদেশে থাকে এবং তার মা অন্যত্র তার বিয়ে ঠিক করে রেখেছে। কিন্তু মায়ের ঠিক করা মেয়েটি তার পছন্দের নয়। সে নিজের পছন্দে বিয়ে করবে। আলোচনা শেষে উভয় পক্ষের সমঝোতায় গত বছরের ২ জুলাই শাপলা ও শহিদুলের বিয়ে হয়। তবে শহিদুল তার শ্বশুরকে বিয়ের কথা কিছুদিন গোপন রাখতে বলে। বিয়ের পরদিন শহিদুল এক লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা যৌতুক নিয়ে নিজ বাড়ীতে যাওয়ার কথা বলে চলে যায়। এর দুই সপ্তাহ পর তার প্রথম স্ত্রীকে ভাবী সাজিয়ে নিয়ে এসে সমস্যার কথা বলে আরো এক লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা শ্বশুরের নিকট থেকে নেয়। এর কিছুদিন পর থেকে শহিদুল নব বিবাহিত স্ত্রী শাপলার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও শহিদুলের কোন খোঁজ না মিললে অসহায় শাপলার বাবা জামাইয়ের খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পারেন শহিদুল ভূয়া ঠিকানা দিয়েছে সেই সাথে সে পুলিশ সদস্যও নয়। শহিদুলের প্রতারণার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর শাপলার পরিবার শহিদুলকে ধরার জন্য কৌশলের আশ্রয় নেয়। এ সময় তারা শাপলার ছোট বোন সুমি খাতুনকে দিয়ে পরিচয় গোপন করে শহিদুলের নিকট মোবাইলে প্রেম নিবেদন করায়। শহিদুল সুমির প্রেমে সাড়া দিয়ে মোবাইলে যোগাযোগ করতে থাকে। এর কিছুদিন পর সুমি শহিদুলকে জানায় সে পালিয়ে তার সাথে বিয়ে করবে। শহিদুলও বিয়েতে সম্মতি জানিয়ে ২৫ জানুয়ারী সুমিকে গোবিন্দগঞ্জের মায়ামনি মোড়ে আসতে বলে। শহিদুলের কথা মতো সুমি নির্ধারিত সময়ে মায়ামনির মোড়ে উপস্থিত হয়। সেই সাথে গোবিন্দগঞ্জ থানাকে বিষয়টি অবহিত করে। শহিদুল তার ভাবী পরিচয় দেয়া প্রথম স্ত্রীকে সাথে নিয়ে সুমির কাছাকাছি আসা মাত্রই পুর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশের সদস্যরা শহিদুলের প্রথম স্ত্রী শিরিন বেগম সহ শহিদুলকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে। এ বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মেহেদী হাসান সাংবাদিকদের বলেন, শহিদুল ইসলাম বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে পুলিশ কখনো বা আর্মি পরিচয়ে একাধিক বিয়ে করে। এসব ঘটনায় তার প্রথম স্ত্রী শিরিন সহযোগিতা করে থাকে। বিয়ের নাটক সাজিয়ে স্বামী স্ত্রী প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেয়াই তাদের পেশা। উল্লেখিত ঘটনায় শহিদুল ইসলামসহ তিনজনকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।