এস এম সাব্বির, গোপালগঞ্জ:
সড়ক ও জনপথ গোপালগঞ্জ জোনের সহকারী প্রকৌশলী মো. সফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সরকারি গাড়ীর তেল চুরি, ঠিকাদারদের থেকে চাঁদা নেওয়া, সি এস ও ইষ্টিমেট পাশ করার জন্য মাসোহারা নেওয়া, অপ ক্ষমতা ব্যবহার করে অতিরিক্তি পদে দায়িত্ব নেওয়া এবং কর্মচারিদের মারধর করাসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। একের পর এক অপকর্ম করার পরও প্রকৌশলী মো. সফিকুর রহমান ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদারদের অনেকের প্রশ্ন- তার খুঁটির জোর কোথায়? বিভিন্ন সূত্রের ভিত্তিতে জানাযায়, গোপালগঞ্জ সড়ক ও জনপথ জোনের সহকারী প্রকৌশলী মো. সফিকুর রহমান অতিরিক্ত দায়িত্ব এস ডি কোটালীপাড়া, এছাড়া অলিখিতিভাবে গোপালগঞ্জ জোনের ইষ্টিমেটরের দায়িত্ব পালন করে। এই জোনের ইষ্টিমেটরের পদটির দায়িত্বে ছিলেন প্রকৌশলী নাসরিন সুলতানা। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি বদলি হয়ে যান। এরপর থেকে ইষ্টিমেটরের পদটি ফাকা থাকে। অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করার মত মানুষ থাকলেও কি ভাবে মো. সফিকুর রহমান একজন সহকারী প্রকৌশলী ও অতিরিক্ত দায়িত্ব এস ডি ই কোটালীপাড়া দায়িত্ব নিয়ে আবার জোনের ইষ্টিমেটরের দায়িত্ব পালন করে, তা অনেকের বোধগম্য নয়। মো. সফিকুর রহমান জোনের সহকারী প্রকৌশলী ইষ্টিমেটরের দায়িত্ব পালন করার সুবাদে ইষ্টিমেট পাশ, টেন্ডার আহ্বান ও কার্যাদেশ সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ একাই করে থাকেন। ফলে পছন্দের ঠিকাদারের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে পাশ করা গোপনীয় ইষ্টিমেটের রেট দিয়ে দেয়। গোপালগঞ্জ ডিভিশন থেকে আসা সি এস ও ইষ্টিমেট পাশ করার জন্য এডিশনাল চীফ ইঞ্জিনিয়ারের নাম বলে ৫% টাকা নেন তিনি। অথচ ঠিকাদরদের অভিযোগ সি এস ও ইষ্টিমেট পাশ করার জন্য এডিশনাল চীফ ইঞ্জিনিয়ার কোন টাকা নেয়না। সফিকুর রহমানকে টাকা না দিলে বিভিন্ন অযুহাত দেখিয়ে সি এস ও ইষ্টিমেট পাশ না করে ফেরত পাঠিয়ে দেয়। অতিরিক্ত দায়িত্ব এস ডি ই কোটালীপাড়া হওয়ায় মাঠ পর্যায়ের কাজে সাইট ভিজিট করতে গেলে টাকা না দিলে ঠিকাদারের উপর অত্যাচার চালান তিনি। এতে ঠিকাদারগন অতিষ্ট হয়ে কাজের গতি কমিয়ে দেয় ও কাজ শেষ করতে সময় লাগে এবং ওই ঠিকাদারের কাছে দাবীকৃত টাকা না দিলে ভবিষ্যতে কোন কাজ পাবেনা বলে সাসিয়ে দেয়। মো. সফিকুর রহমান সাইট পরিদর্শন বা কোথাও গেলে সাভ ডিভিশনের গাড়ী ব্যবহার করে। অথচ ঢাকা মেট্রো ভ ৯৫৪৬নং গাড়ীটি ব্যবহার না করেও প্রতি মাসে ২০০ থেকে ২৫০ লিটার তৈল ইসু করে সরকারী অর্থ আত্ত্বসাত করে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে কাজ দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন ঠিকাদারের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে বলে একাধিক ঠিকাদার অভিযোগ করেছে। মো. সফিকুর রহমান জোন অফিসে যোগদান করার পর থেকেই গোপালগঞ্জ জোনের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে বলে জানান একাধিক মহল। এডিশনাল চীফ ইঞ্জিনিয়ার এর নাম ব্যবহার করে এবং ৩/৪ জায়গায় দায়িত্ব থাকায় কর্মচারীদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে ও কথা না শুনলে অন্যত্র বদলী করার ভয় দেখিয়ে নিজের ব্যক্তিগত কাজ হাসিল করেন তিনি। সূত্র জানায়, ৩/৪ জায়গায় দায়িত্ব থাকার কারনে সারাক্ষন টাকা ইনকামের ধান্দায় থাকেন প্রকৌশলী মো. সফিকুর রহমান। প্রকৌশলী মো. সফিকুর রহমান তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে এগুলো মিথ্যা অভিযোগ। এডিশনাল চীফ ইঞ্জিনিয়ারের নির্দেশে আমি সব কাজ করি। এ ব্যাপারে এডিশনাল চীফ ইঞ্জিনিয়ার মো. জাকির হোসেন বলেন, এগুলো আমাদের অধিদপ্তরের ব্যাপার। সচেতন মহল মনে করেন পর্দার আড়ালে দূর্নীতিবাজ ও সরকারি অর্থ আত্ত্বসাতকারী প্রকৌশলী মো. সফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সরোজমিনে তদন্ত করলে এর সত্যতা বেড়িয়ে আসবে।