মোঃ বদরুল আলম, গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : এ বছর গোপালগঞ্জে ৮১ হাজার ৩৮০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির উপ-পরিচালক আঃ কাদের সরদার এ তথ্য জানিয়ে বলেন, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ২০ হাজার ৯৩৮ হেক্টর, মুকসুদপুর উপজেলায় ১৩ হাজার ৩০৬ হেক্টর, কাশিয়ানী উপজেলায় ১১ হাজার ৭৩৬ হেক্টর, কোটালীপাড়া উপজেলায় ২৬ হাজার ৪৯৯ হেক্টর ও টুঙ্গীপাড়া উপজেলায় ৮ হাজার ৯০১ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ৮১ হাজার ৩৮০ হেক্টর জমি আবাদের জন্য ৪ হাজার ৬৬৯ হেক্টরে বীজতলা প্রস্তুত করেছে এ অঞ্চলের কৃষকেরা। এখন জমি চাষ দিয়ে বোরো ধানের চারা রোপণের কাজ পুরোদমে শুরু হয়েছে। আগামী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে এই জেলায় বোরো ধান রোপণের ৮০ ভাগ কাজ শেষ হবে। বাকী ২০% জমি নিম্নাঞ্চল ও জলাবদ্ধ হওয়ায় একটু দেরিতে রোপণ কাজ সম্পন্ন হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির অতিরিক্ত উপ-পরিচালক সঞ্জয় কুন্ডু বলেন, ধানের জেলা গোপালগঞ্জে ধান আবাদ বৃদ্ধির জন্য কৃষিবান্ধব বর্তমান সরকার জেলার ৫টি উপজেলার ৭০ হাজার কৃষকের মাঝে কৃষি প্রণোদনার বীজ ও সার বিনামূল্যে প্রদান করেছে। এর মধ্যে ৪০ হাজার কৃষককে ২ কেজি করে মোট ৮০ হাজার কেজি হাইব্রীড ধান বীজ বিতরণ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এছাড়াও ৩০ হাজার কৃষককে ৫ কেজি করে উচ্চ ফলনশীল (ইনব্রীড) উফশী ধান বীজ, ১০ কেজি করে ডিএপি সার ও ১০ কেজি করে এমওপি সার দেওয়া হয়েছে। এসব বীজ ও সার দিয়ে ৭০ হাজার কৃষক চাষাবাদ করবেন। গত নভেম্বর মাসেই এসব সার ও বীজ প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান তিনি।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাফরোজা আক্তার বলেন, ধানের আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য আমরা কৃষকদেরকে হাইব্রীড ধান চাষে উদ্বুদ্ধ করেছি। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার ২০ হাজার ৯৩৮ হেক্টর জমির মধ্যে ১৭ হাজার ১২৯ হেক্টর জমিতে হাইব্রীড ধানের আবাদ হবে এবং ৩ হাজার ৮০৮ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলশীল (ইনব্রীড), উফশী এবং ১ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের বোরো ধানের আবাদ হচ্ছে। এ অঞ্চলের কৃষকেরা প্রণোদনার বীজ ও সার পেয়ে বোরো আবাদে মাঠে নেমে পড়েছেন। কৃষকের উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখে মনে হচ্ছে, এ বছর গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে বোরো ধানের আবাদ হতে যাচ্ছে।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রঘুনাথপুর ইউনিয়নের কৃষক মানিক বালা বলেন, ধানের হাইব্রীড ও উচ্চ ফলনশীল (ইনব্রীড) উফশী জাত আসার পর ধান চাষ করে আমরা অধিক ফলন পেয়ে লাভবান হচ্ছি।
সদর উপজেলার কৃষক দেবদাষ মন্ডল বলেন, সময়মত বীজ ও সার হাতে পেয়ে গত বছরের তুলনায় অধিক জমি বোরো ধান চাষের আওতায় এসেছে।