এস এম সাব্বির, গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
গত মঙ্গলবার (২ জুন) বিকালে কোটালীপাড়ার রামশীল বাজার এলাকায় পিটুনিতে নিখিল তালুকদার গুরুতর জখম হন। পরদিন ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতালে তিনি মারা যান। নিহত নিখিল তালুকদার কোটালীপাড়া উপজেলার রামশীল গ্রামের নীলকান্ত তালুকদারের ছেলে। নিহত কৃষক নিখিলের ভাই মন্টু তালুকদার বাদী হয়ে রোববার রাতে কোটালীপাড়া থানায় মামলা দায়ের করলে তখনই আসামীদের গ্রেপ্তার করা হয়। আসামিরা হলেন কোটালীপাড়া থানার এএসআই শামীম হাসান ও কোটালীপাড়া পৌর এলাকার কয়খাঁ গ্রামের রেজাউল (৩৯)।
কোটালীপাড়া থানার ওসি শেখ লুৎফর রহমান জানান, হত্যা মামলাটি রোববার রাতেই রেকর্ড করা হয়েছে। মামলার আসামি এএসআই শামীম হাসানকে জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। তাকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এছাড়া মামলা দায়েরের পর রাতেই পুলিশ রেজাউলকে তার গ্রামের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। তাদের আদালতে হাজির করা হবে।
মামলার বাদী মন্টু তালুকদার বলেন, আমার ভাই নিখিলকে এএসআই শামীম হাসান ধরে মারপিট করে এবং এক পর্যায়ে হাঁটু দিয়ে নিখিলের পিঠে আঘাত করেন শামীম। এ কাজে রেজাউল তাকে সহায়তা করেন। এতে নিখিলের মেরুদন্ড ভেঙে যায়। নিখিলকে প্রথমে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে বুধবার বিকালে নিখিল মারা যান।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিখিলের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার মহরদেহ রামশীল গ্রামে দাহ করা হয়।
মামলার বাদী আরও বলেন, এ ঘটনার পর প্রভাবশালী একটি মহল গোপনে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে তাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করে। থানায় মামলা না করে পরে তারা বাধ্য হয়ে শনিবার সালিশ বৈঠকে যান। সেখানে পাঁচ লাখ টাকায় এটি দফারফা করা হয়। সেখানে নিখিলের পরিবারের দুই সদস্যকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। এতে আমরা সম্মত ছিলাম না; কিন্তু সেখানে এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার সাহস আমাদের ছিল না। দুই লাখ টাকা নিয়ে আমরা সালিশ মেনে কোনোরকমে চলে আসি। আসলে সেভাবে আপস মীমাংসা হয়নি। তাই অবশেষে ন্যায্য বিচার পেতে আমরা মামলা দায়ের করেছি। তবে চাপ প্রয়োগকারী প্রভাবশালীদের নাম তিনি প্রকাশ করতে রাজি হননি।
গোপালগঞ্জ জেলা কৃষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আবু হোসেন বলেন, পরিবারটি প্রভাবশালী চক্রের অপতৎপরতা থেকে বেরিয়ে এসে অবশেষে মামলা দায়ের করেছে। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানাই।