মেহেরপুর ব্যুর প্রতিনিধি:
গাংনীর ৩নং কাজীপুর ইউপিতে অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির (ইজিপিপি) পর্যায়ের অনুমোদিত ৫ টি প্রকল্প সমূহের রাস্তায় সংস্কার উন্নয়ন কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি চলছে। এসব অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ মানতে নারাজ উপজেলা পিআইও অফিস। বরং পিআইসিদের বাঁচাতে পিআইও অফিসের সাফাই গাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পিআইও অফিস ও পিআইসিদের মধ্যে অনুপস্থিত লেবারের টাকা ভাগাভাগির চুক্তি করে কাগজে কলমে ভূঁয়া মাষ্টার রোল করে এই প্রকল্পের টাকা পকেটস্থ করলেও ট্যাগ অফিসাররা দেখছেন না। আবার দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার (তদারকি) গাংনী রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর রবিউল ইসলাম সরেজমিনে কোনদিন মনিটরিং-এ না গেলেও মাস্টার রোলে স্বাক্ষর করে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। অফিসার সরেজমিনে তদারকি না করার ফলে কাজীপুর ইউপিতে গৃহীত ৫ টি প্রকল্পে নামমাত্র শ্রমিক লাগিয়ে কর্মসংস্থান কর্মসূচির ১৭ লাখ ৩৬ হাজার টাকার অধিকাংশ অর্থ লুটপাট হচ্ছে।আজ শনিবার দুপুর ১২ টার সময় কাজীপুর গ্রামের মনিরুল ইসলাম মেম্বরের প্রকল্প (উপকারভোগীর সংখ্যা -৭১ জন) সরেজমিনে গিয়ে কোন লেবার পাওয়া যায়নি। পিআইসি মনিরুল ইসলাম মোবাইল ফোনে জানান, লেবারদের মধ্যে একটু ভুল বোঝাবুঝির কারনে কাজ হয়নি। তিনি আরও জানান, প্রতিটা প্রকল্প থেকে কমপক্ষে ৫ জন করে শ্রমিকের টাকা অফিস কেটে নিচ্ছে। বিগত ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে গাংনী উপজেলায় কাজ শুরু হলেও কাজীপুর ইউপির সবকয়টি প্রকল্পে শতকরা ৬০-৭০ জনের বেশী লেবার পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি সন্তোষজনক (লেবার) শ্রমিকের দেখাও মেলেনি। উপজেলায় অতিদরিদ্রদের জন্য নেয়া কর্মসংস্থান কর্মসূচিতে দলীয় বিবেচনায় শ্রমিকদের নামের তালিকা করা হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, শ্রমিকদের নাম পরিবর্তন করার নিয়ম না থাকলেও সব প্রকল্পে নতুন নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সরেজমিনে কাজীপুর ইউপির ৪ টি প্রকল্প ঘুরে স্থানীয় লোকজন ও শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আমাদের কার্ড দেয় না। এছাড়া লেবারের কার্ড বা হাজিরা খাতা মেম্বররা তাদের নিজের কাছে রেখে মনগড়া হাজিরা করছেন। ভবানীপুর গ্রামের লেবার সর্দ্দার জানান, তালিকায় ১৮ জন লেবার থাকলেও আমি ১৬ জন হাজিরা করি। পীরতলা গ্রামের লেবার সর্দ্দাও আয়নাল হক জানান, তালিকায় ৫৬ জন লেবার থাকলেও মেম্বর আমাকে ৫০ জনের হাজিরা করতে বলেছেন। কাজীপুর বর্ডার পাড়ার লেবার সর্দ্দার বাবলু জানান, ৩৪ জন লেবারের তালিকা থাকলেও আমাকে ৩১ জনের হাজিরা করতে বলেছেন। তবে হাজিরা খাতায় শতভাগ লেবারের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। অন্যদিকে মনিরুল ইসলামের প্রকল্পে কোন লেবার দেখা মেলেনি।
এ নিয়ে গাংনী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের উপ সহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে সাংবাদিকরা যা খুশী তাই লিখুক। আমাদের অফিসের কিছুই হবে না।
এ ব্যাপারে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমান জানান, বাংলাদেশের কোথাও গাংনীর মত কাজ হচ্ছে না। প্রায় শতভাগ লেবার সব প্রকল্পে দেখা গেছে। পিআইও অফিসের কার্যক্রমে সাফাই করায় জনমনে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। আপনারা বিভিন্ন প্রকল্প ঘুরে অনিয়ম পেলে বেশী বেশী সংবাদ লিখতে থাকেন।