ভাঙ্গুড়া (পাবনা) থেকে
পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় খেজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত গাছিরা। ভাঙ্গুড়া উপজেলার অষ্টমনিষা ইউনিয়নের ছোট বিশাকোল গ্রামে দেখা মিলে খেজুর গাছে রসের হাড়ি লাগাতে গাছিকে। আগাম শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে খেজুর গাছের রস সংগ্রহে নেমে পড়েছেন ঐ এলাকার ৩/৪ জন গাছি। ভাঙ্গুড়া উপজেলার ছোট বিশাকোল গ্রামে চলার পথে নজরে পড়ে গাছিদের কর্মব্যস্ততা। গাছিরা কোমরে দড়ি বেঁধে দা ও হাইসা কোমরে খাচায় নিয়ে খেজুর গাছে উঠে নিপুণ হাতের কারুকাজে গাছের ছাল তোলা ও নলি বসাচ্ছেন। আবার কোথাও শুরু করে দিয়েছেন রস সংগ্রহের কাজ।
গাছি আবদুর রহমানের ছেলে আলাউদ্দিন প্রামাণিক (৫৫) জানান, তিনি ১৩/১৪ বছর হলো এই শীতের সময় ৭০/৮০টার মতো গাছ লাগান। এইসব গাছ থেকে প্রতি মাসে প্রায় ২৫ হাজার টাকা আসে। তিনি আরও বলেন, প্রতি কেজি খেজুরের গুঁড় ১০০ টাকা করে বিক্রি করেন।
একই গ্রামের মোঃ জালাল উদ্দিনের ছেলে মোঃ শরিফ উদ্দিন (৪৮), মোঃ আবু তালেবের ছেলে আব্দুল রাজ্জাক (৫৫) এরা সবাই ১০০/১২০টির মতন খেজুর গাছ লাগান বলে জানান। বছরের এই সময়টায় হাতে তেমন কোনো কাজ না থাকায় তারা খেজুরের রসের উপর নির্ভর করেন। তারা আরও জানান, দিন দিন খেজুর গাছের পরিমাণ প্রতিনিয়ত কমে যাওয়াতে এই পেশা হারিয়ে যেতে বসেছে।
একই ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী গ্রামের মহির প্রামাণিক ও রিপন সরকার জানান, তাদের গ্রামে ছোটবেলায় অনেক গাছ লাগাতে দেখেছেন। এখন আর চোখে পড়ে না এই খেজুর গাছ লাগাতে।
স্থানীয়রা জানান, সাধারণত বছরের অক্টোবর মাসের শেষ থেকে শুরু হয় গাছ লাগানো আর ফেব্রুয়ারির শেষ পর্যন্ত এই ৪ মাস খেজুরগাছ থেকে মিষ্টি রস সংগ্রহ করা হয়। তবে কোন কোন সময় শীত আগে আসলে রস সংগ্রহও শুরু হয় আগেভাগেই। শীত এলেই শহর থেকে অনেক মানুষ ছুটে যান গ্রামে খেজুর রস খেতে ও গুঁড় সংগ্রহের জন্য।