মোঃ আব্দুল কুদ্দুস,কুষ্টিয়া প্রতিনিধি:
কুষ্টিয়া শহরের কোর্টপাড়াস্থ সুখনগর রেলওয়ে বস্তি ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে মানববন্ধন করেছেন বস্তির বাসিন্দারা। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর মুর্যালের সামনে শতাধিক বস্তিবাসী মানববন্ধনে অংশ নেন। এরপর তাদের একটি প্রতিনিধি দল জেলা প্রশাসকের সাথে দেখা করে বস্তি রক্ষার জন্য দাবি জানান। তারা জেলা প্রশাসকের কাছে আরজি জানাতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেন তাদের কথা শোনেন। বিষয়টি নিয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবার আশ^াস দেন।
বস্তির বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কুষ্টিয়া শহরের মাঝখান দিয়ে অনেক পুরোনো রেললাইন। পশ্চিমে মজমপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে পূর্ব দিকে কোর্টষ্টেশন পর্যন্ত প্রায় আধা কিলোমিটার রেললাইনের দুই ধারে সুখনগর বস্তি। প্রায় ৪০ বছর ধরে এই বস্তিতে মানুষ বসবাস করে আসছে। তাদের সংখ্যা প্রায় দেড়শ পরিবার। বস্তির সাথে বিভিন্ন সময়ে সেখানে কিছু পাকা দালান, স্কুল, মন্দির ও দোকানঘরও নির্মাণ হয়েছে।
সম্প্রতি সেখানে রেলওয়ে বিভাগের লোকজন গিয়ে উচ্ছেদের জন্য অধিকাংশ ঘরে লাল ক্রস চিহৃ দিয়ে চিহিৃত করেছে। এরপর থেকে বাসিন্দারা উচ্ছেদ আতঙ্কে আছেন। বুধবার বস্তি ভাঙার জন্য সেখানে অভিযান চালানো হবে বলেও তাঁরা জানতে পেরেছেন। মালপত্র সরিয়ে নিতে বলাও হয়েছে। উচ্ছেদের প্রতিবাদে বস্তিবাসী সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধু মুর্যালের সামনে ব্যানার ও ফেস্টুন হাতে মানববন্ধন করেন। উচ্ছেদ আতঙ্কে বস্তিবাসীর দাবি, পুর্নবাসন না করে হঠাৎ করে উচ্ছেদের হুমকিতে তারা বিপাকে পড়েছেন। কি করবেন বুঝতে পারছেন না। বস্তিবাসীর সবার মুখে এক কথা, বেছে বেছে ঘর চিহিৃত করা হয়েছে। রেললাইনের দুই ধারে কিছু পাকা দালান আছে তাদের চিহিৃত করা হয়নি। বিষয়টি তাদের কাছে ঘোলাটে মনে হচ্ছে। বস্তিবাসীর নেতা নগেন বলেন, যাদের ঘর চিহিৃত করা হয়েছে তাদের বসবাসের জন্য কোন লীজও দেওয়া হচ্ছে না। অথচ দশ বছর আগে অবৈধ জায়গা যারা লীজ নিয়েছে তাদের ভাঙা হচ্ছে না। আবার লীজ নিতে গেলেও দেওয়া হচ্ছে। শফিকুল ইসলাম নামে এক বস্তিবাসী বলেন, ‘সুখনগর বস্তির নাম হলেও এখানে ঝুপড়ি ঘরে কেউ সুখে নাই। বাধ্য হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। সরকার ব্যবস্থা করে দিলে সব বস্তিবাসী চলে যাবে। কিন্তু এভাবে হঠাৎ উচ্ছেদ করলে কেউ মানবে না।
বস্তির বাসিন্দাদের অধিকাংশই রিকশা চালক কিংবা গৃহপরিচারিকার কাজ করেন। মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুর রক্ষায় সবাই কাজ বাদ দিয়ে চলে এসেছিলেন মানববন্ধনে। কারও কোলে দুধের বাচ্চা, কারও সঙ্গে বয়স্ক বাবা-মা। মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে ছিলেন স্থানীয় পত্রিকার এক হকার সগীর আলী। তিনি বলেন, ‘আজকে কেউ কাজে যায় নাই। আগে তো থাকার জায়গা বাঁচাইতে হবে। আমরা কী এ দেশের নাগরিক না। অন্য জায়গা না দিয়ে ঘর ভাঙি দিবে তাইলে আমরা কুথায় যাবো।’ জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন বলেন, রেলের জায়গায় বস্তিটি। এখানে সহস্রাধিক মানুষ বাস করে। বিষয়টি নিয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রেলকেও বাঁচাতে হবে, পাশাপাশি বস্তিবাসীও দেশের নাগরিক তাদেরও গুরুত্ব দিতে হবে।
কুষ্টিয়ায় সুখনগর রেলওয়ে বস্তি ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মানববন্ধন
মোঃ আব্দুল কুদ্দুস,কুষ্টিয়া প্রতিনিধি:
কুষ্টিয়া শহরের কোর্টপাড়াস্থ সুখনগর রেলওয়ে বস্তি ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে মানববন্ধন করেছেন বস্তির বাসিন্দারা। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর মুর্যালের সামনে শতাধিক বস্তিবাসী মানববন্ধনে অংশ নেন। এরপর তাদের একটি প্রতিনিধি দল জেলা প্রশাসকের সাথে দেখা করে বস্তি রক্ষার জন্য দাবি জানান। তারা জেলা প্রশাসকের কাছে আরজি জানাতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেন তাদের কথা শোনেন। বিষয়টি নিয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবার আশ^াস দেন।
বস্তির বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কুষ্টিয়া শহরের মাঝখান দিয়ে অনেক পুরোনো রেললাইন। পশ্চিমে মজমপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে পূর্ব দিকে কোর্টষ্টেশন পর্যন্ত প্রায় আধা কিলোমিটার রেললাইনের দুই ধারে সুখনগর বস্তি। প্রায় ৪০ বছর ধরে এই বস্তিতে মানুষ বসবাস করে আসছে। তাদের সংখ্যা প্রায় দেড়শ পরিবার। বস্তির সাথে বিভিন্ন সময়ে সেখানে কিছু পাকা দালান, স্কুল, মন্দির ও দোকানঘরও নির্মাণ হয়েছে।
সম্প্রতি সেখানে রেলওয়ে বিভাগের লোকজন গিয়ে উচ্ছেদের জন্য অধিকাংশ ঘরে লাল ক্রস চিহৃ দিয়ে চিহিৃত করেছে। এরপর থেকে বাসিন্দারা উচ্ছেদ আতঙ্কে আছেন। বুধবার বস্তি ভাঙার জন্য সেখানে অভিযান চালানো হবে বলেও তাঁরা জানতে পেরেছেন। মালপত্র সরিয়ে নিতে বলাও হয়েছে। উচ্ছেদের প্রতিবাদে বস্তিবাসী সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধু মুর্যালের সামনে ব্যানার ও ফেস্টুন হাতে মানববন্ধন করেন। উচ্ছেদ আতঙ্কে বস্তিবাসীর দাবি, পুর্নবাসন না করে হঠাৎ করে উচ্ছেদের হুমকিতে তারা বিপাকে পড়েছেন। কি করবেন বুঝতে পারছেন না। বস্তিবাসীর সবার মুখে এক কথা, বেছে বেছে ঘর চিহিৃত করা হয়েছে। রেললাইনের দুই ধারে কিছু পাকা দালান আছে তাদের চিহিৃত করা হয়নি। বিষয়টি তাদের কাছে ঘোলাটে মনে হচ্ছে। বস্তিবাসীর নেতা নগেন বলেন, যাদের ঘর চিহিৃত করা হয়েছে তাদের বসবাসের জন্য কোন লীজও দেওয়া হচ্ছে না। অথচ দশ বছর আগে অবৈধ জায়গা যারা লীজ নিয়েছে তাদের ভাঙা হচ্ছে না। আবার লীজ নিতে গেলেও দেওয়া হচ্ছে। শফিকুল ইসলাম নামে এক বস্তিবাসী বলেন, ‘সুখনগর বস্তির নাম হলেও এখানে ঝুপড়ি ঘরে কেউ সুখে নাই। বাধ্য হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। সরকার ব্যবস্থা করে দিলে সব বস্তিবাসী চলে যাবে। কিন্তু এভাবে হঠাৎ উচ্ছেদ করলে কেউ মানবে না।
বস্তির বাসিন্দাদের অধিকাংশই রিকশা চালক কিংবা গৃহপরিচারিকার কাজ করেন। মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুর রক্ষায় সবাই কাজ বাদ দিয়ে চলে এসেছিলেন মানববন্ধনে। কারও কোলে দুধের বাচ্চা, কারও সঙ্গে বয়স্ক বাবা-মা। মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে ছিলেন স্থানীয় পত্রিকার এক হকার সগীর আলী। তিনি বলেন, ‘আজকে কেউ কাজে যায় নাই। আগে তো থাকার জায়গা বাঁচাইতে হবে। আমরা কী এ দেশের নাগরিক না। অন্য জায়গা না দিয়ে ঘর ভাঙি দিবে তাইলে আমরা কুথায় যাবো।’ জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন বলেন, রেলের জায়গায় বস্তিটি। এখানে সহস্রাধিক মানুষ বাস করে। বিষয়টি নিয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রেলকেও বাঁচাতে হবে, পাশাপাশি বস্তিবাসীও দেশের নাগরিক তাদেরও গুরুত্ব দিতে হবে।