মোঃ মুক্তাদির হোসেন
গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ পৌর এলাকার সড়কের মোড়ে মোড়ে মৌসুমী শীতের পিঠা বিক্রি শুরু হয়েছে। জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। আগেকার মত এখন আর শীতে শহরের বাড়ি বাড়ি শীতের পিঠা বানানোর উৎসব হয় না। তাই গরম গরম ধোঁয়া ওঠা ভাঁপা পিঠার স্বাদ নিতে মানুষ যাচ্ছে বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে মৌসুমী পিঠার দোকানে। এছাড়াও বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে, পাড়ায় পাড়ায় ভ্রাম্যমাণ পিঠার দোকান খুলে বসে শীতের পিঠার দোকান সাজ্জাচ্ছে স্থানীয় দোকানীরা। এই মৌসুমী পিঠার দোকানগুলোতে বিকেল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত পিঠার স্বাদ নিতে মানুষ ভিড় জমে। স্বল্প আয়ের পরিবারের নারী, পুরুষ এই মৌসুমে বাড়তি কিছু আয় করে পরিবারে স্বচ্ছলতা আনতে পিঠার দোকানের পসরা সাজায়।
শীতের প্রকোপ যতোই বাড়বে পিঠা বিক্রিও ততো বাড়বে বলে জানালেন কালীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডের মা-বাবার দোয়া পিঠার দোকানের মালিক পিঠা বিক্রেতা কাইউম ভান্ডারী। তিনি জানান, এই পিঠা বিক্রির টাকার লাভের অংশ পরিবারের কিছুটা হলেও স্বচ্ছলতা আনে। তিনি প্রায় ১০ বছর যাবৎ শীত মৌসুমে পিঠা বিক্রি করেন। শহরের মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত পরিবারে এখন আর বাড়িতে পিঠা তৈরী করেন না। তারা রাস্তার মোড়ে বিক্রি হওয়া পিঠা কিনে বাড়িতে নিয়ে যান। কালীগঞ্জ পৌর এলাকার বহুতল ভবনের বাসিন্দাদের রান্নাঘরে মাটির চুলা নেই, নেই খড়ি দিয়ে জাল দেয়ার ব্যবস্থা। তাছাড়া পিঠা তৈরীতে অনেক ঝামেলাও আছে।
রাস্তার মোড়ে মোড়ে শুধু ভাঁপা পিঠাই নয়, বিক্রি হচ্ছে চিতইপিঠা, ডিম চিতই পিঠা, কুলি পিঠা ও ঝালপিঠাসহ নানা রকমের পিঠা। সাথে আছে রকমারি ভর্তা। কালীগঞ্জ পৌর এলাকার ফাইম গেইটে, উপজেলা, বড়বাড়ীর মোড়, কালীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড, পুরাতন ব্যাংকের মোড়, গুদারাঘাট, ভার্দাতীর মোড়, আড়িখোলা, কাপাশিয়ার মোড়, বাইপাস মোড়ে পিঠার দোকান বসেছে।
পিঠা বিক্রেতারা জানান, রাস্তার পাশে থেকে চিতই পিঠা কিনে নিয়ে বাড়িতে দুধ জাল দিয়ে তাতে পিঠা ছেড়ে দিলেই হয়ে যায় দুধ চিতই পিঠা। প্রতি পিস ভাঁপা ও চিতই পিঠা ১০ টাকা করে বিক্রি হয়। এছাড়া কুলি পিঠা ১০ টাকা, তেলের পিঠা ১০ টাকা, পাটিসাপটা পিঠা ১৫ টাকা করে বিক্রি করছেন দোকানীরা। শীতের আমেজে পিঠাপুলির দেশ আমাদের বাংলাদেশ। এরই ধারাবাহিকতায় গাজীপুরের কালীগঞ্জও পিছিয়ে নেই। শীতের আমেজকে বরণ করতে ও পুরনো দিনের স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন সংগঠন আয়োজন করে পিঠা উৎসব।