গোলাম মোস্তফা সাফু,কমলগঞ্জ প্রতিনিধি:
ভ্রমণে আসা দর্শনার্থী ও স্থানীয় যাত্রীরা প্রতিনিয়ত লাঞ্ছিত হচ্ছেন সিএনজি চালকদের হাতে। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ভানুগাছ বাজার মাধবপুর সড়ক দখলে রাখা অবৈধ সিএনজি স্ট্যান্ডের চালকদের হাতে প্রতিনিয়তই ভ্রমণে আসা দর্শনার্থী ও স্থানীয় যাত্রীরা অপদন্ত ও লাঞ্ছিত হচ্ছেন। সম্প্রতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষিকা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) রেহাই পায়নি তাদের অপদস্তের হাত থেকে, জোরপূর্বক রিক্সা থেকে নামাতে বাধ্য করে, এবং সিএনজি রির্জাব নিয়ে যাওয়ার জন্য জোর করে। বেপরোয়া অবৈধভাবে সড়ক দখলে রাখা চালক সম্পর্কে উপস্থিত কয়েকজন পথচারী অভিযোগ করে বলেন। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ভানুগাছ বাজার থেকে পঞ্চাশ টাকা ভাড়ায় শিব বাজার সংলগ্ন মাধবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রিক্সাযোগে যাওয়ার চেষ্টা করলে সিএনজি চালকরা তার রিক্সা আটকিয়ে তাকে রিকশা থেকে নামিয়ে দেয়, শিক্ষিকা স্কুলে যেতে দেরি হওয়ার কথা জানালেও সিএনজি চালকরা কোন কথা শুনেনি, বরং তাকে বাধ্য করে সিএনজি রিজার্ভ নেওয়ার জন্য। শিক্ষিকা রিজার্ভ নিতে অস্বীকার করলে সিএনজি চালকরা সিরিয়ালের দাঁডয়ি থাকা সিএনজি যাত্রী পূর্ণ হলে সেটা দিয়ে যাওয়ার জন্য জোর করে। ঘন্টা খানেক দাঁড়িয়ে থাকার পর বাধ্য হয়ে সিএনজি রির্জাব করে স্কুলে গেলেন শিক্ষিকা। এ বিষয়ে শিক্ষিকার সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি রিক্সা আটকানোর সত্যতা নিশ্চিত করলেও আত্মসম্মানের কারনে সংবাদটি না করার জন্য অনুরোধ করেন। সিএনজি চালকদের এসব অপকর্ম বন্ধের জন্য স্হানীয় পথচারী ও যাত্রীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। শিক্ষিকা অপদস্তের বিষয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, কমলগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মনজুর আহমদ আজাদ মান্না বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। একজন মানুষ চলাচলের জন্য কোন যানবাহন ব্যবহার করবে এটা তার একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। এখানে আমার একজন শিক্ষিকার চলাচলে যারাই বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে আমি তার নিন্দা জানাই। ভবিষ্যতে যেন, কেউই এমন পরিস্থিতির শিকার না হন সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি। ভানুগাছ সিএনজি চালক সমিতির সভাপতি মোঃ নুর মিয়া বলেন অবৈধ অটোরিকশা গুলো সিএনজির যাত্রী নিয়ে যায় বিধায় তারা রিকসা দিয়ে মাধবপুর সড়কে কোন যাত্রী যেতে দেন না। তবে শিক্ষিকা অপদস্তের বিষয়ে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন। সরেজমিন গিয়ে জানা যায় ভানুগাছ চৌমুহনী থেকে মাধবপুর সড়কে কোনো যাত্রী রিক্সা নিয়ে যেতে পারবে না সিএনজি যোগে যেতে হবে এটা তাদের নিজস্ব আইন। বাধ্য হয়ে মেনে নিচ্ছেন নিরুপায় রিকশাচালক। ভ্রমণে আসা দর্শনার্থী ও যাত্রীরা রিক্সা নিয়ে শিববাজার, মাধবপুর বাজার, ধলাইরপার ও বাসানি গাঁও গ্রামে যেতে চাইলে রিকশা আটকিয়ে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হয় এবং জোরপূর্বক সিএনজি রিজার্ভ করতে বাধ্য করা হয়, নতুবা সিরিয়ালের সিএনজি জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। যার কারনে অনেকেই নির্দিষ্ট স্থানে সময় মত যেতে বাধ্য হয়ে রির্জাব করছেন তাদের সিএনজি। নিরুপায় যাত্রী ও পরিবার-পরিজন নিয়ে বেড়াতে আসা দর্শনার্থীরা সিএনজি চালকদের অশ্লীল আচরণের কাছে নথি স্বীকার করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না। বাধ্য হয়ে অনিচ্ছা শর্তেও সিএনজি চালকদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন। কমলগঞ্জ থানার ওসি আরিফুর রহমান বলেন সিএনজি চালক কতৃক যাত্রী ও পর্যটক অপদস্ত এবং লাঞ্ছিতের বিষয়টি আমার জানা নেই তবে তদন্ত করে দেখা হবে। তিনি আরোও বলেন কমলগঞ্জ পৌরসভা অটোরিকশাকে কেবল পৌরসভার ভিতরেই চলার জন্য অনুমতি দিয়েছে এর বাইরে অটোরিকশা চলতে পারে না।