কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
পর্যটন খ্যাত মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার সংরক্ষিত বনাঞ্চলে তক্ষক বা আঞ্চলিক ভাষায় কক্ষক পাচারের সাথে জড়িত কয়েকটি গ্রুপের অপতৎপরতায় হুমকিতে আছে এই অঞ্চলের বন্যপ্রাণী। কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া, মাগুরছড়া, মেন্দিটিলা, পোড়ানবাড়ী পাহাড়ী এলাকা এবং আদমপুর বনবিট এলাকার কিছু বনাঞ্চল এলাকায় এই তক্ষক পাচারকারী চক্রগুলো সক্রিয়। যদিও র্যাব, পুলিশ মাঝেমধ্যে অভিযান চালিয়ে হাতেনাতে এসব পাচারকারী চক্রের কয়েকজনকে আটক করে। তারপরও থেমে থাকেনি তক্ষক পাচারকারী চক্রের তৎপরতা। স্থানীয় বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, শুধু কমলগঞ্জই না সারা জেলার বনাঞ্চলে এসব পাচারকারী চক্রগুলো সক্রিয়। টিকটিকির মত আকারে বড় দেখতে এই সরীসৃপ প্রাণী সাধারণত গাছের মধ্যে বিশেষ স্থানে বা বাসা বাড়ির ছাদ, সিলিং অংশে লোকচক্ষুর আড়ালে থাকে। গভীর রাতে পোকামাকড় খেতে বের হলে অনেকে দেখতে পায় এই শান্ত প্রাণীটি। আর এসময়ে তক্ষকের বিশেষ আওয়াজ (হ্বক্ক) ডাক শুনে পাচারকারীরা কোটি টাকার লোভে এই নিরীহ প্রাণীটিকে ধরে নিয়ে নির্ধারিত পাচারকারী চক্রগুলোর প্রধানের নিকট পৌঁছায়। সূত্র মতে, পাচারকারী চক্রের প্রধান ব্যক্তি বা গোষ্ঠী শ্রীমঙ্গল উপজেলার কালাপুর নামক পাহাড়ের এলাকায় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা লোকজনদেরকে এই তক্ষক দেখিয়ে প্রতারিত করে। কমলগঞ্জ রেঞ্জবন অফিসার (রেঞ্জার) মোঃ নজরুল ইসলাম জানান, তক্ষকের দাম কোটি টাকা এটা আসলে একটা গুজব ছড়ানো ছাড়া আর কিছুই না। আর এই গুজবে জড়িয়ে সব হারাচ্ছে এ অঞ্চলে বসবাসকারী বেকার জনগোষ্ঠী। কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি ইয়ারদৌস হাসান বলেন, পুলিশের নজরদারি আছে। তাছাড়া টুরিস্ট পুলিশ সবসময়ই এসব বিষয় নজরদারিতে আছে। শ্রীমঙ্গলের বন্যপ্রাণী গবেষক হিতেস রঞ্জন মনে করেন তক্ষক শিকারীদের কারণে কমলগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল এলাকার সংরক্ষিত বনাঞ্চলের অন্যান্য বন্যপ্রাণী বিলুপ্ত হওয়ার হুমকিতে আছে।