এবিএম ফজলুর রহমান, পাবনা প্রতিনিধি
গত শনিবার স্বল্প পরিসরে উত্তরণের সাহিত্য আড্ডা ও এক যুগ পূর্তি উপলক্ষে সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও কেক কাটার মধ্য দিয়ে উদযাপিত হলো উত্তরণের ১২ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট পাবনার সভাপতি আবুল কাশেম। উত্তরণ সভাপতি আলমগীর কবীর হৃদয় এর উপস্থাপনায় আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন রুপান্তর সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মাজহার, গণশিল্পী সংস্থার বিপ্লব ভৌমিক, আবৃত্তিকার ও কবি আসাদ বাবু, কবি মন্জুরুল ইসলাম, রিয়াজুল হক, উত্তরণ সাধারণ সম্পাদক পলাশ আব্দুল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক রাফিদ আহমেদ, সহ সাধারণ সম্পাদক রুদ্র বিশ্বাস, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দীন লিমন, কবি ও গীতিকার মরিয়ম বেলারুশী, সদস্য নাঈম আহমেদ প্রমুখ। উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানের শুরুতে সদ্য প্রয়াত কবি ইদ্রিস আলী, সাংবাদিক ও সাহিত্যিক কামাল লোহানী ও কণ্ঠশিল্পী এন্ডু কিশোর এর আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
কিভাবে এক যুগে পা রাখলো আন্তর্জাতিক সাহিত্য সংগঠন “উত্তরণ সাহিত্য আসর”।
২০০৮ সালের ২৫ জুলাই একদল তরুন লেখকদের নিয়ে গঠন করা হয় উত্তরণ সাহিত্য আসর। শুরুতে সংগঠনটির নাম দেওয়া হয়েছিল- উত্তরণ সাহিত্য পরিষদ। তবে, প্রতিষ্ঠার পর জানা যায় “উত্তরণ সাহিত্য পরিষদ” নামে কোন একটি সংগঠন ইতোমধ্যে রয়েছে। তাই পরবর্তী কার্যকরী মিটিংয়ে নাম পরিবর্তন করে “উত্তরণ সাহিত্য আসর করা হয়।” সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আলমগীর কবীর হৃদয়, তিনি বর্তমানেও সভাপতি হিসেবে আঁকড়ে ধরে রয়েছেন এই পরিবারটিকে। প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক ছিলেন রেহানা সুলতানা শিল্পী। তারও সাংগঠনিক পথচলা এই উত্তরণের হাত ধরেই। এছাড়াও উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠার সময় উপদেষ্টামন্ডলীতে ছিলেন একঝাঁক শিক্ষাবিদ ও প্রতিষ্ঠিত কবি। যেমন- কবি ওমর আলী, এনামুল হক টগর, আখতার জামান, আব্দুল করিম এর মত সাহিত্য বোদ্ধাগণ। পাবনার ছোট্ট একটি শহর থেকে যাত্রা শুরু করে এই সাহিত্য সংগঠন। যা এই ১২ বছরে পরিচিতি ও খ্যাতি অর্জন করেছে বাংলাদেশের ৬৪ জেলা, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতসহ বিভিন্ন দেশে। বর্তমানে বাংলাদেশে ১৪টি ও ভারতে ২টি শাখা কমিটি রয়েছে। কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রতিষ্ঠাকালীন শহর পাবনাতেই। খুব অল্প সময়ের মধ্যে পরিচিতি অর্জন করে এই সাহিত্য পরিবার। তাই, কবি, সাহিত্যিক ও পাঠকদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করার লক্ষ্যে প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী থেকে শুরু হয় উত্তরণ লেখক সম্মেলন। ৩য় বর্ষ থেকে ভারত বাংলাদেশের খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ, কবি, সাহিত্যিকদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হচ্ছে উত্তরণ আন্তর্জাতিক লেখক সম্মেলন।
নবীন ও প্রবীণ লেখকদেরকে একটি মলাটে নিয়ে আসতে প্রতি ৩ মাস অন্তর প্রকাশিত হচ্ছে “ত্রৈমাসিক উত্তরণ কন্ঠ”। সৃজনশীল ও প্রচারবিমুখ কবি, সাহিত্যিক লেখকদের লেখাকে সামনে আনতে উত্তরণ প্রকাশনী থেকে নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে গ্রন্থ। যারা ইতোমধ্যে শতাধিক বই প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছেন। “লেখকের লেখনী হোক সমাজ সংস্কারের হাতিয়ার” – এই প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে উত্তরণ লেখনীর মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন অসঙ্গতি নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে এসেছে এবং আসছে। যার অধিকাংশই সফলতা অর্জন করেছে। নিয়মিত নতুন নতুন লেখকের জন্ম দিচ্ছে এই আন্তর্জাতিক সাহিত্য পরিবার। উত্তরণ’র এক যুগ পূর্তি উপলক্ষ্যে অনেক আয়োজনের প্রস্তুতি চলছিল। কিন্তু, করোনার এই দূর্যোগ বিবেচনায় আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলনের আয়োজন স্থগিত করা হয়। আজ উত্তরণ ১২’তে পা রাখায় শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেছেন উত্তরণ সাহিত্য আসর, পাবনা কেন্দ্রীয় কার্যালয় এর সভাপতি কবি ও গীতিকার আলমগীর কবীর হৃদয়, সাধারণ সম্পাদক পলাশ আব্দুল্লাহসহ উত্তরণের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ।