আত্রাই (নওগাঁ) থেকে
নওগাঁর আত্রাই উপজেলার গ্রামীণ সড়কগুলোতে এখন মৃত্যুর আতঙ্ক ড্রাম ট্রাক ও ট্রাক্টর। সরকারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে সড়ক-মহাসড়ক দিয়ে দিনে ও রাতে অবাধে চলছে লাইসেন্সবিহীন ড্রাম ট্রাক-ট্রাক্টর। সড়কে চলাচলে সরকারি বিধিনিষেধ থাকলেও দিন দুপুরে ও রাতের অন্ধকারে প্রশাসনের নাকের ডগায় লাইসেন্সবিহীন ও অপ্রাপ্ত বয়সের চালক দ্বারা বেপরোয়া গতিতে চলছে বালু বহন, মাটিবাহী ড্রাম ট্রাক ও রাতের অন্ধকারে আবাদি জমিতে পুকুর খনন করে মাটি বহনকারী ট্রাক্টর। গ্রামীণ সড়কগুলো যেমন নষ্ট হচ্ছে তেমনি প্রতিনিয়ত ঘটছে দূর্ঘটনা। সূর্য উদয়ের পূর্বেই দেখা যায়, কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বেড়িয়ে পড়ে স্ব-স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্যে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে গ্রামের সব ধরণের দোকানপাট হাটবাজার শুরু হয়। গ্রামীণ সড়কগুলোতে যান চলাচলও বাড়তে থাকে। প্রশাসনের চোখকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সরকারি বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে দ্রুতগতিতে চলছে বালুবাহী ড্রাম ট্রাক ও ট্রাক্টর। মাটি বালুবাহী ড্রাম ট্রাক ও ট্রাক্টর চলাচলে নষ্ট হচ্ছে যেমন রাস্তাঘাট তেমন বহন করা মাটি রাস্তায় পড়ে হচ্ছে ধুলা ও বালি। রাস্তায় চলাচলের সময় বাতাসে ধুলাবালি নাকে-মুখে ঢুকে যাওয়ার পাশাপাশি পথচারী হয়ে পড়ছে অসুস্থ।
স্কুলগামী তানিয়া আক্তারের মা রহিমা আক্তার বলেন, অনেক শীত পড়েছে সকালে রাস্তায় ঘন কুয়াশা থাকে। এই সময় আমরা আমাদেরে সন্তানদের কিভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠাবো। কিভাবে নিশ্চিত হবে তাদের রাস্তায় নিরাপত্তা। সরকারি নিয়ম না মেনে মাটি বহন করে ভোর থেকে রাস্তায় চলছে বেপরোয়াভাবে ড্রাম ট্রাক-ট্রাক্টর।
অটোরিকশা চালক সেলিম হোসেন বলেন, গ্রামীণ সড়কগুলোতে অবৈধ যানবাহন দখলদারদের দৌরাত্মে তাদের কারণে প্রতিদিনই ঘটছে মর্মান্তিক দূর্ঘটনা। কারণ বেশিরভাগ চালক অদক্ষ। তারা সড়কে বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালায়। সড়কে চলাচলের সময় সাইড দিতে চায়না। অনেক সময় গাড়ি দিয়ে ধাক্কা মারে। এতে অনেকেরই ক্ষতি হচ্ছে। কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পায় না। কারণ গাড়ির মালিকেরা অনেক ক্ষমতাশীল ব্যক্তি। তাদেরকে পুলিশ প্রশাসনও ভয় পায়। তা না হলে লাইসেন্সবিহীন গাড়িগুলো রাস্তায় চলে কি করে? একের পর এক সড়কে মর্মান্তিক দূর্ঘটনার পরেও কি করে পুলিশ প্রশাসন নিরব থাকে? পুলিশ প্রশাসন কি গাড়িগুলো রাস্তায় দেখতে পায় না?
উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের আমিনুল হক বলেন, সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে মাঠ থেকে আবাদি জমিতে পুকুর খনন করে সে মাটি বিভিন্ন ইট ভাটাতে সরবরাহ করতে সারা রাত চলাচল করে মাটিবাহী ট্রাক্টর। এতে যেমন আমাদের ঘুমের ক্ষতি হচ্ছে তেমনি আবাদি জমি দিন দিন কমে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকতেখারুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ পেলে বিধি মোতাবেক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।