আগৈলঝাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় যৌতুকের জন্য গৃহবধুকে শারিরীক নির্যাতন করা হয়েছে। এসময় গৃহবধুর কোলে থাকা ৩ মাসের শিশুকে আছার দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শ্বশুরের বিরুদ্ধে। গৃহবধু ও শিশু কন্যাকে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় ঐ গৃহবধু বাদী হয়ে আগৈলঝাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশের এসআই আলী হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের উত্তর শিহিপাশা গ্রামের দরিদ্র ইউসুফ ফড়িয়ার মেয়ে লামিয়া আক্তার (২১)কে একই উপজেলার রাহুতপাড়া গ্রামের মোঃ জব্বার খাঁনের ছেলে সুজন খাঁনের সাথে দেড় বছর পূর্বে বিয়ে দেওয়া হয়। ব্যবসার কথা বলে পিতার বাড়ি থেকে যৌতুক হিসেবে ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হয় স্বামী সুজনকে। বিয়ের পর থেকে শ্বশুর জব্বার খাঁন বিভিন্ন সময় পূত্রবধূকে কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় পূত্রবধু লামিয়ার ৩ মাসের শিশু সুজন খাঁনের জন্মের নয় বলে দাবী করে বিভিন্ন সময় শ্বশুর পূত্রবধু লামিয়াকে মারধর করত। এরই ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবার দুপুরে পুনরায় ৫০ হাজার টাকা বাবার বাড়ি থেকে আনার জন্য লামিয়া আক্তারকে চাপ প্রয়োগ করে স্বামী সুজন খাঁন ও শ্বশুর জব্বর খাঁন। দরিদ্র পরিবার হওয়ায় যৌতুকের টাকা এনে দিতে পারবে না বলে জানান লামিয়া আক্তার। এর পরে ঘরে আটক করে স্বামী সুজন খাঁন লামিয়াকে শারিরীক নিযার্তন করে গুরুতর আহত করে। এসময় শ্বশুর জব্বার খাঁন লামিয়ার কোল থেকে ৩ মাসের কন্যা সানিহাকে নিয়ে আছার মেরে মাটিতে ফেলে দেয়। এতে শিশু সানিহা গুরুতর আহত হয়। লামিয়া আক্তার ও তার কন্যা সানিহাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে আগৈলঝাড়া উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় লামিয়া আক্তার বাদী হয়ে গত মঙ্গলবার বিকেলে আগৈলঝাড়া থানায় স্বামীর পরিবারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে থানার এসআই আলী হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত লামিয়ার স্বামী সুজন খাঁন বলেন, লামিয়াকে কোন মারধর করা হয়নি। সে আমার মেয়ে সানিহাকে কোল থেকে ফেলে দেওয়ায় তাকে একটি থাপ্পর দেওয়া হয়েছে। আমার ও পিতার বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা অভিযোগ করেছে লামিয়া আক্তার।
এ ব্যাপারে থানার এসআই আলী হোসেন লামিয়া আক্তারের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বখতিয়ার আল-মামুন বলেন, মা ও মেয়ে অসুস্থ্য অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। তাদের চিকিৎসা দেওয়ার পর তারা উভয়ে ভাল আছেন।