এবিএম ফজলুর রহমান, পাবনা প্রতিনিধি
ডিজিটাল প্লাটফর্ম জুম এর মাধ্যমে পাঠদানের জন্য রিসোর্স পার্সন হিসেবে মনোনয়ন পেলেন সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ পাবনার সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এ কে এম শওকত আলী খান। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক তাকে এ মনোনয়ন দেওয়া হয়। সুত্র: জাতী/বি/ডিনস-এনইউ/ ২০২০- অনলাইন-লেকচার-নথিপত্র (২) স্মারকে তাকে এ মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস ( কোভিড-১৯) এর প্রাদুর্ভাবের মধ্যে অধিভুক্ত কলেজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে একাডেমিক কার্যক্রম চলমান রাখার স্বার্থে ডিজিটাল প্লাটফর্ম জুম- এর মাধ্যমে লেকচার প্রদানের জন্য রিসোর্স পার্সন হিসেবে তাকে মনোনীত করা হয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান সিলেবাস অনুযায়ী স্নাতক (সম্মান) প্রোগ্রামের ২২২০০৫ নং কোর্স সামাজিক পরিসংখ্যান পাঠদানের জন্য এবং মাস্টার্স (ফাইনাল) প্রোগ্রামের ৩১২০১৩ নং কোর্স তুলনামূলক সমাজ কাঠামো পাঠদানের জন্য তিনি মনোনীত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, ড. এ কে এম শওকত আলী খান কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর উপজেলার জুমাপুর গ্রামের সম্ভ্রান্ত খান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাজিতপুর পাইলট হাই স্কুল থেকে প্রাইমারি ও জুনিয়র পরীক্ষায় স্কলারশিপ লাভ করেন এবং উক্ত স্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় মানবিক শাখায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। তিনি ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় মেধা তালিকায় স্থানসহ ট্যালেন্টপুল স্কলারশিপ লাভ করেন এবং পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে সমাজবিজ্ঞানে কৃতিত্বের সঙ্গে বি.এস.এস ( সম্মান) ও এম এস এস ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ইমপ্যাক্টস অব কোস্টাল ট্যুরিজম অন রাখাইন কমিউনিটি ইন কক্সবাজার’ বিষয়ে অভিসন্দর্ভ রচনার জন্য পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি ১৯৯৬ সালে ১৬’শ বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে (মেধাক্রমে-২) প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। সুদীর্ঘ ২৪ বছরের কর্মজীবনে তিনি সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজ, সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ, দর্শনা সরকারি কলেজ এবং ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজে অধ্যাপনা করেছেন। বর্তমানে তিনি সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি উচ্চ মাধ্যমিক, ডিগ্রী, অনার্স ও মাস্টার্স শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য ২০টি গ্রন্থ রচনা করেছেন। তার রচিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে স্বাধীন বাংলাদেশ অভ্যুদয়ের ইতিহাস, প্রারম্ভিক সমাজবিজ্ঞান, সামাজিক নৃবিজ্ঞান, সামাজিক পরিসংখ্যান, ধ্রুপদী সমাজতাত্ত্বিক মতবাদ, ধ্রুপদী সমাজচিন্তা, সামাজিক ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা, বাংলাদেশের সমাজবিজ্ঞান, রাজনৈতিক সমাজবিজ্ঞান, গবেষণা পদ্ধাতি ও মনোগ্রাফ, সমাজ ও সম্প্রদায়, সমাজ মনোবিজ্ঞান, অপরাধ ও বিচ্যুতি, সমসাময়িক সমাজবিজ্ঞানের তত্ত্ব, তুলনামূলক সমাজ কাঠামো, কৃষক সমাজ, শিল্প সমাজবিজ্ঞান, উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণির সমাজবিজ্ঞান ১ম ও ২য় পত্র, সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
খেলাধুলা ও সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন প্রবন্ধ ও সমালোচনামূলক লেখনী অব্যাহত রেখেছেন। ছাত্রজীবনে তিনি ছিলেন বিতার্কিক ও আবৃত্তিকার। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট। জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ- ২০১৬ , ২০১৭, ২০১৮ এবং ২০১৯ উপলক্ষে কলেজ পর্যায়ে পরপর চারবার পাবনা জেলার শ্রেষ্ঠ শ্রেণিশিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন। সর্বশেষ পাবনার ঐতিহ্যবাহী ইছামতি নদী উদ্ধার আন্দোলন পাবনার ডাকে রাজপথে বিভিন্ন মানববন্ধনে তাকে অংশ নিতে দেখা গেছে। তিনি ১ ছেলে এবং ২ মেয়ে সন্তানের জনক।
প্রসঙ্গতঃ গত ১০ আগস্ট দৈনিক সিনসা সহ স্থানীয় কয়েকটি পত্রিকায় “এডওয়ার্ডের শিক্ষক ড. শওকত আলীসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা” শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের ব্যাখ্যা হিসেবে ড. এ কে এম শওকত আলী জানান, মালয়েশিয়ায় একটি ট্রেনিংয়ে অংশ নেওয়ার পর তার মায়ের অসুস্থতার কারণে সেখানে সঠিকভাবে সময় দিতে পারেননি এবং ট্রেনিং শেষে অ্যাসাইনমেন্ট পেপার দিতে দেরী করায় তারসহ আরও কয়েকজনকে ব্যক্তিগত শুনানির জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব এর নিকট উপস্থিত হতে বলা হয়েছে। এখানে অনিয়মের কোন ঘটনা ঘটেনি।